বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা একটা বড় অংশ দখল করে ছিল। মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা, উপজাতি কোটা, তৃতীয় লিঙ্গ কোটা, জেলা কোটা সহ আরো অনেক কোটা ছিল। যা সরকারি চাকরির প্রায় ৫৬ শতাংশ দখল করে ছিল। আর মেধা ছিল মাত্র ৪৪%।
এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। তারা এই কোটার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে। আর শুরু করে আন্দোলন। প্রথমে এই আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরবর্তীতে এটা সমগ্র ঢাকা এবং অতপর সমগ্র দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনে বহু শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে। তাছাড়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রছাত্রীদের ওপরে লাঠি নিয়ে অনেক মারধর করে। পুলিশের গুলিতেও মারা যায় অনেকে। তখন ছাত্ররা আরো জোরালো আন্দোলন শুরু করে।
পরে সরকার কোন উপায না পেয়ে ছাত্রদের আন্দোলনকে সমর্থন করে। এবং আদালতে আপিল করে। আপিল বিভাগ সকলের মতামতের উপর ভিত্তি করে সরকারি চাকুরিতে মেধা ৯৩%, এবং কোটা ৭% রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
অর্থাৎ সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হবে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে এবং ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে। এই ৭% কোটার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা আছে ৫% এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ কোটা ২ %।
আর এর আগের কোটা সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগ আরো বলেছে যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা পাবে। মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিনাতনিরা পাবে না। এই সময়ে যদি কোটার কোন আসন পূরণ না হয়, তবে ঐ শূন্য আসনে প্রার্থী নেওয়া হবে মেধা তালিকা থেকে। এছাড়াও আপিল বিভাগ আরো বলেছে সরকার চাইলে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, সংশোধন করতে পারবে।
তবে সকলের আশা সরকার এই সিদ্ধান্তেত কোন পরিবর্তন করবেন না। এবং আইনমন্ত্রী প্রজ্ঞাপন জারি করার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন যে তারা আপিল বিভাগের একটা কমা পর্যন্তও পরিবর্তন করবেন না।