অনেক পতঙ্গের পায়ে কান থাকে, তবে মানুষের মতো শুদ্ধ কানের গঠন তাদের নেই। পতঙ্গের শ্রবণক্ষমতা অনেকটাই ভিন্ন, এবং তাদের পায়ের মাধ্যমে শব্দ শোনা একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।
পতঙ্গের শ্রবণক্ষমতা:
প্রতিটি পতঙ্গের শ্রবণ প্রক্রিয়া আলাদা, তবে বেশিরভাগ পতঙ্গের শ্রবণ অঙ্গ সাধারণত পায়ে, অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বা শরীরের অন্য অংশে অবস্থান করে। কিছু পতঙ্গ যেমন, মশা বা ঘাসফড়িং, পায়ের মধ্যে বিশেষভাবে তৈরি অঙ্গ থাকে যেগুলি শব্দ তরঙ্গ অনুভব করতে সক্ষম।
পতঙ্গের শ্রবণ অঙ্গ:
১. গ্রন্থি বা হেয়ার (Hair) এর মতো স্নায়ুবিক গ্রন্থি: অনেক পতঙ্গের পায়ে বা শরীরের অন্যান্য অংশে স্নায়ুবিক গ্রন্থি থাকে, যা পরিবেশ থেকে শব্দ তরঙ্গ ধারণ করে এবং সেগুলোকে স্নায়ু সংকেত হিসেবে মস্তিষ্কে পাঠায়। উদাহরণস্বরূপ, ঘাসফড়িং এবং মাকড়সা তাদের পায়ে বিশেষ ধরনের স্নায়ুবিক গ্রন্থি ব্যবহার করে শব্দ শনাক্ত করতে।
২. গ্রন্থিকার মতো (Tympanal Organs): কিছু পতঙ্গ যেমন প্রজাপতি, পতঙ্গ-ভিলেন (grasshoppers) এবং কয়েকটি মথ, তাদের শরীরের অন্যান্য অংশে কান থাকে। এদের পায়ে বা শরীরের অন্য কোনো অংশে একটি ছোট "গ্রন্থি" থাকে, যেটি টিম্পানাল অর্গান নামে পরিচিত। টিম্পানাল অর্গান হল একটি বিশেষ ধরনের অঙ্গ, যা শব্দ তরঙ্গ শোনার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকে। এই অঙ্গগুলো কানের পর্দার মতো কাজ করে এবং শব্দ তরঙ্গের কম্পন স্নায়ু সংকেত হিসেবে মস্তিষ্কে পাঠায়।
পতঙ্গের শ্রবণ ক্ষমতার গুরুত্ব:
-
পতঙ্গেরা সাধারণত শব্দ ব্যবহার করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে বা শিকারী থেকে বাঁচতে সাহায্য করতে। কিছু পতঙ্গ যেমন, ঘাসফড়িং এবং মথ, প্রজনন বা সঙ্গী নির্বাচন করতে শব্দ ব্যবহার করে।
-
পতঙ্গেরা তাদের পরিবেশের শব্দ থেকে শিকারী বা বিপদ সম্পর্কে সতর্ক হতে পারে, যেমন পাখির উপস্থিতি বা অন্য কোনো আক্রমণকারীর গতি।