ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি হল একটি স্নায়বিক রোগ যা সাধারণত ডায়াবেটিস রোগের জটিলতা হিসেবে দেখা যায়। প্রায় ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী এ সমস্যায় ভুগে থাকেন, যা শরীরের বিভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করে। ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন:
১. পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি।
২. অতনমাস নিউরোপ্যাথি।
৩. ভোকাল নিউরোপ্যাথি।
৪. প্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথি।
লক্ষণ:
১. পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: এটি সাধারণত হাত ও পায়ের স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং অসারতা ও অবশ ভাব, ঝিনঝিন ভাব এবং দুর্বলতা সৃষ্টি করে।
২. অটোনমাস নিউরোপ্যাথি: এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন হৃদপিণ্ড, রক্তনালি, মুত্রাশয় এবং অন্ত্র। লক্ষণ গুলোর মধ্যে রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন, হজমে সমস্যা, এবং মুত্রাশয়ের কার্যকারিতা পরিবর্তন হতে পারে। এছাড়াও মাথা ঘোরা বা অতিরিক্ত ঘাম , রুচি কমার মত সমস্যাও দেখা যেতে পারে।
৩. ফোকাল নিউরোপ্যাথি: এটি শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় যেমন মুখ, হাত বা পায়ের স্নায়ুর একটি গ্রুপে কে প্রভাবিত করে।
লক্ষণ গুলোর মধ্যে আক্রান্ত স্থানে হঠাৎ তীব্র ব্যথা বা দুর্বলতা, বুকে ব্যথা, মুখের একপাশ অবষ, হাতে শক্তি কম অনুভব করা, দৃষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. প্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথি: প্রক্সি মাল নিউরোপ্যাথি তে পা, নিতম্ব বা উরুর স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং ব্যথা, দুর্বলতা এবং পেশির ভারসাম্য হ্রাস করে। এ ছাড়াও বুকে বা পেটে ব্যাথা হতে পারে।
ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথির ঝুঁকির কারণ: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল , ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, এছাড়া কিডনির ডিজিজ।
প্রতিরোধ: ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো জীবনধারা পরিবর্তন।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: রক্তে শর্করার মাত্রা যতটা সম্ভব স্বাভাবিকের কাছাকাছি রাখতে পারলে স্নায়ুর ক্ষতি প্রতিরোধ সম্ভব। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে ঔষধ সেবন।
পরামর্শ: চর্বি এবং কোলেস্টেরল কম এমন খাবার খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। শারীরিক কার্যকলাপ বা হাঁটাহাঁটির অভ্যাস রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। অবশ্যই ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। ধুমপান ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথির ঝুঁকি বাড়ায় । তাই ধূমপান ছেড়ে দিলে অনেকাংশে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
চিকিৎসা: রিহেভ ফিজিও চিকিৎসা অত্যন্ত কার্যকরী যে ক্ষেত্রে এভিডেন্স বেসড চিকিৎসা প্রটোকল প্রয়োগ করতে হবে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, সাপ্লিমেন্ট, ভিটামিন চিকিৎসকের পরামর্শে নেওয়া যেতে পারে।
উপরের নিয়ম গুলো থেকে আপনারা বুঝতেই পারলেন ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথি কতটা ভয়ঙ্কর। তাই সকলেই নিয়ম মেনে চলুন আর সুস্থ থাকুন । উত্তরটি পছন্দ হলে একটা আপ ভোট প্রদান করুন। আরো জানতে ইজি আনসারের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।